অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার - চুল পড়া বন্ধের ঘরোয়া উপায়

আমি মোটা হবো কিভাবে-কয়েকটি কার্যকরী টিপস জেনে নিনঅল্প বয়সে চুল পড়ার কারন ও প্রতিকার সম্পর্কে কি আপনি জানতে চাচ্ছেন? যদি আপনি অল্প বয়সে চুল পড়ে যাওয়ার কারণ ও এ থেকে মুক্তির উপায় জানতে চেয়ে থাকেন তাহলে পোস্ট টি আপনার জন্য। অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণগুলো এবং এর প্রতিকার সম্পর্কে জানতে পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
অল্প-বয়সে-চুল-পড়ার-কারন-ও প্রতিকার
চুল পড়া খুব স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে যখন মাত্রাতিরিক্ত চুল পড়ে তখন অবশ্যই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আপনি যদি অল্প বয়সে চুল পড়া নিয়ে অনেক চিন্তিত থাকেন এবং এ থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে এই পোস্টটি আপনার উপকারে আসতে পারে।এ সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

পেজ সূচিপত্রঃ অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ 

অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে আগে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। বর্তমানে অল্প বয়সে চুল পড়া জটিল সমস্যা। অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার নিয়ে অনেকেই চিন্তিত হয়ে থাকেন। আর এই সমস্যায় কমবেশি প্রায়ই অনেকেই ভুগছেন। প্রতিদিন চুল পড়া একটি স্বাভাবিক বিষয় হলেও মাত্রাতিরিক্ত চুল পড়া অনেক চিন্তার বিষয় এবং অস্বাভাবিক। অল্প বয়সে চুল পড়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। তার মধ্যে চুল পড়ার প্রধান কারণ গুলো হচ্ছে-

পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবঃ মানুষের শরীরে যখন পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি থাকে না তখন শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। চুল পড়ার নির্দিষ্ট কারণ এর মধ্যে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব একটি। মাথার চুলের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পুষ্টির প্রয়োজন হয়। এটি হলো প্রোটিন। মানুষের দৈনন্দিন খাদের তালিকা যখন প্রোটিনের উৎসের অভাব থাকে তখন শরীরের প্রোটিনের ঘাটতি দেখা যায়। প্রোটিন ছাড়াও আরো অনেক পুষ্টির অভাবে অল্প বয়সে চুল পড়ে।

মাথার ত্বকের সমস্যাঃ চুল পড়ার অন্যতম একটি কারণ হলো মাথার ত্বকের সমস্যা। চুল যেহেতু মাথার ত্বকে গজায় সেহেতু মাথার ত্বকে কোন রোগ থাকলে তখন চুল ঝরে পড়ে। এছাড়াও মাথার ত্বকে সমস্যা থাকলে যখন গোসলের সময় মাথায় শ্যাম্পু ব্যবহার করা হয় তখন মাথার ত্বকে থাকা উপকারী তেল গুলো ধুয়ে যায় এবং মাথার ত্বক শুকিয়ে যায়। এর কারণে ও চুল ঝরে পড়ে। 

বংশগত কারণঃ বংশগত কারণও অনেক মানুষের অল্প বয়সে চুল পড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে দায়ী। ছেলেদের ক্ষেত্রে যদি তার বংশের বা বাপ দাদার চুল পড়ে টাক হয়ে যাওয়ার রোগ থাকে তাহলে বংশ পরম্পরায় এভাবে চুল পড়ে টাক হয়ে যায়। 

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তাঃ অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার ফলেও অল্প বয়সে চুল ঝরে পড়ে। লম্বা সময় ধরে মানসিক দুশ্চিন্তায় এই ভুগলে এই দুশ্চিন্তা কাটাতে না পারলে চুল পড়তে পারে। বর্তমান সময়ে অনেক মানুষ ব্যস্ত আর দুশ্চিন্তায় জীবন কাটায়। ফলে নিজের শরীরের দিকে তাদের খেয়াল থাকে না এবং দুশ্চিন্তার কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার ঠিকমতো না খাওয়ার ফলে পুষ্টির ঘাটতির কারণে চুল পড়ে যেতে পারে। 

কেমোথেরাপি গ্রহণ করলেঃ কেমোথেরাপি গ্রহণ করার ফলে ও দেখা যায় যে মাথার চুল অনেক ঝরে পড়ে যায়। ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত রোগীদের কেমোথেরাপি চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে হয়। এ কারণে চুল সব ঝরে যায়। 

অপর্যাপ্ত বিশ্রামঃ অপর্যাপ্ত বিশ্রামের ফলে ও অনেক সময় দেখা যায় অল্প বয়সে মাথার চুল পড়ে যায়। বর্তমান সময়ে অফিস বা কাজের প্রেসারে এবং অন্যান্য সাপের কারণে মানুষ ঠিকমতো বিশ্রাম নিতে পারেনা এবং দুশ্চিন্তায় ও ভোগে। পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম না হলে শরীরের প্রতি চাপ সৃষ্টি হয়। যার ফলে শরীরে নানা ধরনের হতে পারে। তার মধ্যে চুল পড়ে যাওয়ার কারণ একটি। 

গর্ভকালীন সময়েঃ গর্ভকালীন সময়ে অধিকাংশ মেয়েদের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে তাদের মাথার চুল আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে বা ঝরে পড়েছে। গর্ভকালীন সময়ে চুল পড়া একটি স্বাভাবিক বিষয়। এতে তোর চিন্তার কোন কারণ নেই। গর্ভকালীন সময়ের পর আবার দেখা যায় আগের মত চুল হয়ে গেছে। আবার গর্ভকালীন সময়ে সবার চুল ঝরে পড়ে না।

অতিরিক্ত শ্যামপুর ব্যবহারঃ অতিরিক্ত শ্যামপুর ব্যবহারের ফলেও চুলের অনেক ক্ষতি হয় এবং ঝরে পড়ে। মাথার ত্বকে এক ধরনের পুষ্টি গুণ তেল থাকে যা অতিরিক্ত শ্যাম্পু করার ফলে এগুলো ধুয়ে যায় এবং মাথার ত্বক শুকিয়ে যায় এর ফলে চুল পড়ে যায়।


ছত্রাক জনিত কারণঃ ছত্রাক জনিত সমস্যার কারণেও অল্প বয়সে মাথার চুল পড়ে যায়। মাথার ত্বকে অনেক কারণে ছত্রাকের সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে চুল ভিজে থাকা এবং স্যাঁতস্যাঁতে চুল ঢেকে রাখার জন্য মাথার তোকে এক ধরনের ছত্রাকের সংক্রমণ দেখা দেয়। এই সময় মাথা চুলকায় এবং মাথার ত্বক লাল হয়ে থাকে। যার কারণে চুল পড়ে।
মাথায় খুশকির কারণেঃ অল্প বয়সে চুল পড়ার অন্যতম একটি কারণ হলো মাথায় অতিরিক্ত খুশকি। চুলের অযত্ন অথবা মাথায় ঠিকমত শ্যাম্পু ব্যবহার না করার কারণে খুশকি দেখা দেয়। এছাড়াও চুলে তেল না দেওয়ার কারণে ও খুশকি দেখা দেয়। কারণ একটা সময় মাথার ত্বকের পুষ্টিগুলো শুকিয়ে যায় অথবা বের হয়ে যায় এবং যার ফলে মাথার চুল পড়ে যায়।   

প্রতিদিন সাধারণত কয়টি চুল পড়া স্বাভাবিক?

চুল পড়া একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। প্রত্যেকটি মানুষের মাথা থেকে প্রতিদিন কিছু সংখ্যক চুল ঝরে যায়। দেখা যায় যে মানুষ প্রতিদিন ৫–১০ টা চুল পড়লেই অনেক চিন্তায় পড়ে যায়। ভাবে যে তার মাথা থেকে প্রতিদিন এই পরিমাণ চুল পড়ে গেলে হয়তো একদিন তার মাথা চুল শূন্য হয়ে পড়বে। যারা এই চিন্তা করেন তাদের জন্য একটা সুখবর হতে পারে যে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১০০ এর বেশি চুল পড়া স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে প্রতিদিন যদি ১৫০ এর বেশি চুল আপনার মাথা থেকে ঝরে পড়ে তাহলে সেটি অস্বাভাবিক। এখন বোঝার বিষয় যে আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনার মাথায় থেকে কতগুলো চুল উঠছে। 

এর জন্য আপনাকে প্রতিদিন সকালে কিংবা একটা নির্দিষ্ট সময়ে চিরুনিতে, বালিশে এবং বিছানায় পড়ে থাকা চুলগুলো গুনতে পারেন। আবার মাথায় হাত দিয়ে এক গোছা চুল টেনে দেখতে পারেন। যদি এক গোছা চুলের মধ্যে অধিকাংশ চুলই উঠে আসে তাহলে অবশ্যই চিন্তার বিষয় এবং এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে সাবধান হতে হবে। প্রতিদিন এত বেশি চুল পড়ার কারণ গুলো খুঁজে বের করে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। পরামর্শ অনুযায়ী আপনাকে চুলের যত্নের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি গুণসম্পন্ন খাবার খেতে হবে এবং চুলের যত্নের জন্য যা যা করণীয় সবগুলোই আপনাকে মেনে চলতে হবে। 

চুল পড়ার জন্য কোন হরমোন দায়ী 

অনেক সময় হরমোন জনিত কারণেও মাথার চুল পড়ে যায় এবং টাকও হয়ে যায়। নারী ও পুরুষদের চুল পড়ার কারণ হিসেবে অ্যান্ড্রোজেন হরমোনকে বড় কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়। তবে এই অ্যান্ড্রোজেন হরমোন মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের শরীরে বেশি থাকে। এই অ্যান্ড্রোজেন হরমোন যাদের শরীরে বেশি থাকে তাদের চুল বেশি পড়ে। হরমোনের ব্যালেন্সের কারনে চুল পড়ার সমস্যা অতিমাত্রায় দেখাতে পারে। নিচে আরো কয়েকটি হরমোন জনিত সমস্যার কারণ উল্লেখ করা হলো –

টেস্টোস্টেরন হরমোনঃ এই হরমোন মূলত পুরুষের  সেক্স হরমোন হলেও নারীদের শরীরেও খুবই সামান্য পরিমাণ রয়েছে। এই হরমোন অনেক কারণে নারীদের শরীর থেকে বেশি প্রডিউস হয় এবং তখন চুল পড়ার মত কারণ সৃষ্টি হয়।

আরো পড়ুনঃ চুল পড়া রোধে মেহেদী পাতার ব্যবহার - চুলের যত্নে মেহেদি পাতার উপকারিতা

প্রেগনেন্সি হরমোনঃ প্রেগনেন্সির সময়ে নারীদের বেশি পরিমাণে চুল ঝরে পড়ে। প্রেগনেন্সির  সাধারণত ১–৫ মাসের ভিতরে  অর্ধেক মেয়েদের বেশি পরিমাণে চুল পড়ে যায়। এই চুল পড়া সমস্যা বাচ্চা জন্ম হওয়ার পরও দেখা যায়। এবং চুল পড়া পরিমাণে এতই বেশি হয় যে চুলের গোছায় হাত দিয়ে টান দিলে হাত ভর্তি চুল উঠে যায়। 

মেনোপজ হরমোনঃ মেয়েদের চুল পড়ার পিছনে মেনোপজ হরমোন বেশি প্রভাব ফেলে। মেনোপজ শুরুর আগে এবং পরে এমন একটি অবস্থায় সেক্স হরমোনে পরিবর্তন হয় এবং স্ট্রেস হরমোন বাড়তে শুরু করে আরে এই কারণেই মেয়েদের মাথার চুল পড়ে যায়।

চুল পড়া বন্ধ করার খাবার

চুল পড়া বন্ধ করতে হলে আপনার চুলে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি থাকতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি আপনি তখনই পাবেন যখন নিয়ম করে পুষ্টি গুণে ভরপুর কিছু খাবার খাবেন। চুলের জন্য যে পুষ্টির দরকার হয় সেইসব খাবারগুলো বেশি বেশি খেতে হবে। নিচে চুল পড়া রোধে কার্যকরী ১০টি গুরুত্বপূর্ণ খাবার নিয়ে আলোচনা করা হলো –
অল্প-বয়সে-চুল-পড়ার-কারন-ও প্রতিকার
বাদামঃ
বাজারে অনেক রকমের বাদাম পাওয়া যায়। তার মধ্যে কয়েকটি হল – কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, পেস্তা বাদাম, চিনা বাদাম, বল নাট ইত্যাদি। এগুলোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এছাড়াও রয়েছে ওমেগা ৬ ফ্যাট। অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার এই উপাদান চুলের গোড়া শক্ত ও লম্বা করতে সাহায্য করে। এই পুষ্টি উপাদানগুলো শুধুমাত্র খাবারের মাধ্যমেই তৈরি হয়। এই পুষ্টির অভাবে মাথার চুলের রং হালকা হয়ে যায় এবং চুল পড়ে যায়। তাই চুল পড়া বন্ধ করতে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় কিছু বাদাম রাখতে পারেন যাতে প্রোটিনের ঘাটতি না হয়।
হলুদ ও কমলা রঙের সবজি আর ফলমূলঃ শাকসবজি এবং ফলমূলের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ। মিষ্টি আলু, আম, পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, গাজর এই শাকসবজি এবং ফলগুলো খেলে চুলের গোড়া শক্ত হয় এবং আস্তে আস্তে চুল পড়া কমে। 

তৈলাক্ত মাছঃ ওমেগা ৩ ফ্যাট এর জন্য তৈলাক্ত মাছ বেশ কার্যকরী। আমাদের দেশীয় কিছু মাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাট আছে। যেমন কই, ইলিশ, মলা, চাপিলা এগুলোতেও ওমেগা ৩ ফ্যাট আছে। এই মাছগুলো খাওয়ার ফলে আপনার মাথার চুল ঘন কালো করতে সাহায্য করবে। 

ডিমঃ ডিম প্রোটিনের একটি বড় উৎস হাওয়ায় চুলের জন্য বেশ উপকারী। আমাদের চুল পুরোটাই প্রোটিনের তৈরি। খাবারে প্রোটিনের অভাব হলে চুল পড়ে যায়। তাই খাবার তালিকায় অবশ্য আপনাকে ডিম রাখতে হবে। 

পালং শাকঃ চুল পড়া রোধে এবং চুলের গঠন ঠিক রাখতে পালং শাক অনেক উপকারী। চুলের ভেতর থেকে পুষ্টি যোগায় এরকম অনেক উপাদান এই পালং শাকে রয়েছে। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, আয়রন ইত্যাদি। এই উপাদানগুলো  চুল ঘন ও কালো করতে অনেক কার্যকরী। 

ডালঃ সুন্দর চুলের জন্য ডাল বেশি উপকারী। ডালে রয়েছে আয়রন, প্রোটিন ইত্যাদি। আমাদের মাথার তালুতে রক্ত সরবরাহ করে চুলের গোড়ায় অক্সিজেন পৌঁছাতে সাহায্য করে। প্রোটিনের পাশাপাশি আয়রনের অভাবে ও মাথার চুল পড়ে যায়। এজন্য মাথা চুল পড়া বন্ধ করার জন্য ডাল খাওয়া জরুরী।

বিভিন্ন ধরনের বীজঃ সুন্দর চুলের জন্য বীজ অনেক উপকারী। এতে অনেকগুলো পুষ্টিগুণ সম্পন্ন  উপাদান রয়েছে। এর মধ্যে চিয়া সীড, মিষ্টি কুমড়ার বিচি, সূর্যমুখের বিচি, তিশার বিচি অন্যতম। এসব বীজ খাওয়ার ফলে চুল পড়ার সম্ভাবনা কমে আসবে। 

ছোলাঃ ছোলাতে চুলের জন্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে যেমন আয়রন,জিংক ও প্রোটিন। যেগুলো চুলের জন্য অত্যাবশ্যক। এই উপাদান গুলোর অভাবে চুল পড়তে পারে তাই খাবার তালিকায় মাঝে মাঝে ছোলা রাখবেন।

টক দইঃ টক দই প্রোটিনের আরেকটি উৎস হিসেবে কাজ করে থাকে। এছাড়াও টক দইয়ে রয়েছে জিংক। যেগুলো চুলের জন্য অনেক উপকারী উপাদান। 

টক ফলঃ টক ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। এগুলো হলো লেবু, কমলা, মাল্টা ইত্যাদি। চুলের জন্য এই ভিটামিন সি অনেক ভূমিকা পালন করে। তাই চুল পড়া বন্ধ করতে টক ফল খাওয়ার অভ্যাস করুন। 

অল্প বয়সে চুল পড়া বন্ধ করতে এইসব খাবারগুলো খাওয়ার অভ্যাস করলে চুল পড়া বন্ধ হবে আশা করা যায়। 

চুল পড়া বন্ধের ঘরোয়া উপায় 

চুল পড়া বন্ধ করার জন্য অনেক কিছু ব্যবহার করেও সঠিক ফল পাওয়া যায় না। চুল পড়া বন্ধ করার জন্য বাজারের কেমিক্যাল যুক্ত তেলের বদলে ঘর উপায় কিছু উপাদান ব্যবহার করলে চুল পড়া কমানো যায়। চুল পড়া বন্ধ করার কিছু ঘরোয়া উপায় আছে। যেমন–

নারিকেল দুধের ব্যবহারঃ আমরা সাধারণত চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য নারিকেল তেল ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আপনি জানেন কি নারিকেলের দুধ ব্যবহার ফলে মাথার চুল পড়া বন্ধ করা যায়। নারিকেলের দুধ চুলের ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। নারিকেলের দুধ প্রক্রিয়ার জন্য প্রথমে নারিকেল থেকে নারিকেল কুরে নিতে হবে। তারপর সেই কুরা নারিকেল গুলা পরিষ্কার কাপড়ে করে চিপে নিতে হবে। তারপর নারিকেলের দুধ হালকা গরম করে মাথায় লাগাতে হবে। আধাঘন্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে চুল ধুয়ে নিতে হবে। এভাবে সপ্তাহে একদিন নারিকেলের দুধ চুলের যত্নে ব্যবহার করতে পারেন।

নিম পাতার ব্যবহারঃ চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার অনেক আগে থেকে রয়েছে। অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার চুলে নিম পাতার রস ব্যবহার করলে চুল এবং মাথার ত্বক ভালো থাকে। কারণ নিম পাতায় রয়েছে উচ্চমাত্রায় ফ্যাটি এসিড এবং এটা চুলের জন্য অনেক উপযুক্ত। নিম পাতা ব্যবহারের জন্য প্রথমে ১০-১২ টি নিম পাতা বেটে রস বের করে নিতে হবে। তারপর ওই রসে পরিমাণ মতো নারিকেল তেল মিশাতে হবে।এরপর এ মেশানো উপকরণটি মাথার ত্বকে এবং মাথার চুলে ভালো করে লাগাতে হবে। আধা ঘন্টা পরে ধুয়ে ফেলতে হবে।নিমপাতা অনেক উপকারী হওয়ায় মাথার ত্বকে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এর কাজ করে।নারিকেল তেল ছাড়া আরো কয়েকটি তেল মেশানো যেতে পারে যেমন অলিভ অয়েল ও আমন্ড অয়েল। নিয়মিত এ মিশ্রণটি ব্যবহারের ফলে মাথার চুল মজবুত এবং দ্রুত লম্বা হতে সাহায্য করবে।

মেথির ব্যবহারঃ চুল পড়া বন্ধ করার জন্য মেথি আরেকটি ওষুধে গুণাগুনে ভরপুর একটি উপাদান। বন্ধ করার জন্য অনেকেই মাথার চুলে মেথি ব্যবহার করে থাকে।মেথিতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন যা চুলকে বৃদ্ধি করতে এবং মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন করতে সাহায্য করে। মাথার চুল মেথি ব্যবহারের জন্য প্রথমে দুই চামচ মেথি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে ভেজানো মেথি বেটে নিতে হবে এবং এর সাথে ২-৩ ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে। এই মিশ্রণটি সপ্তাহে একদিন ব্যবহার করলেই উপকার পাবেন।

চুল পড়া বন্ধ করার তেলের নাম

চুল পড়া বন্ধ করার জন্য তেল অনেক গুরুত্বপূর্ণ। চুল পড়া বন্ধ করার জন্য সবাই কোন না কোন তেল ব্যবহার করে থাকে। চুল পড়া বন্ধ করার জন্য বেশ কয়েকটি তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন-
অল্প-বয়সে-চুল-পড়ার-কারন-ও প্রতিকার
অ্যাভোকাডো তেলঃ
 অ্যাভোকাডো তেলে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি। অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার এই তেলে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন ডি, আয়রন অ্যামাইনো এসিড ও ফলিক অ্যাসিড। রিটেল ব্যবহার করলে চুলের গোড়ায় সপ্তাহ এবং চুল পড়া বন্ধ হবে।
নারিকেল তেলঃ নারিকেল তেল কমবেশি সকলেই ব্যবহার করে থাকে। এই তেল প্রায় সব ধরনের চুলে ব্যবহার করা যায়। চুলে নারিকেল তেল ব্যবহারে ফলে মাথার ত্বক ভালো থাকে এবং খুশকি হতে দেয় না।
অলিভ অয়েলঃ এই তেল মাথার ত্বকের জন্য বেশি উপকারী। এই তেল চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লামাটরি ময়েশ্চারাইজিং। এই তেলের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। যে কেউ এই তেল ব্যবহার করতে পারে।
আমন্ড অয়েলঃ এই তেল ব্যবহার ফলে মাথার সমস্ত ময়লা দূর হয়ে যায়। অনেকে বাইরে কাজ করে হলে মাথা এবং চুলে ময়লা জমে। এই তেলের কাজ হলো চুলের সমস্ত ময়লা দূর করে চুলকে সুন্দর সতেজ রাখা। এই তেল চুল বাড়াতেও সাহায্য করে।

চুল পড়া বন্ধ করার শ্যাম্পু

চুল পড়া বন্ধ করার জন্য বাজারে নানা ধরনের শ্যাম্পু পাওয়া যায়। অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার চুল পড়া বন্ধ করতে এমন কিছু শ্যাম্পু রয়েছে যেগুলো খুঁজে বের করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে এমন কয়েকটি শ্যাম্পু হলো–
  • হিমালয় হারবালস অ্যান্টি হেয়ার ফল শ্যাম্পু -- এই শ্যাম্পু চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে এবং চুলের শেকড় থেকে মজবুত করে পাশাপাশি চুলের বৃদ্ধি করে। 
  • ডাভ হেয়ার ফল রিসকিউ শ্যাম্পু -- এই শ্যাম্পু ব্যবহারের ফলে চুল পড়া কমে যায় এবং চুলকে পুষ্টি যোগায়। এই শ্যাম্পুতে রয়েছে নিউট্রিলক এক্টিভ। 
  • সানসিল্ক হেয়ার ফল সলিউশন শ্যাম্পু -- এই শ্যাম্পু ব্যবহারের ফলে চুলকুড়া থেকে আগা পর্যন্ত মজবুত থাকে এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। এই শ্যাম্পু মাথার ত্বকের উপকারী ভিটামিন না সরিয়ে চুলকে সুস্থ রাখে।
  • ক্লিয়ার অ্যান্টি হেয়ার ফল শ্যাম্পু -- এই শ্যাম্পু ব্যবহারের ফলে মাথায় ত্বকে পুষ্টি জোগায় এবং চুলের গোড়াকে মজবুত ও শক্তিশালী করে তোলে।
  • ক্লিনিক প্লাস শ্যাম্পু -- এই শ্যাম্পু ব্যবহারের ফলে চুল মজবুত এবং বৃদ্ধি পায়। এই শ্যাম্পুতে রয়েছে দুধের প্রোটিন এবং মাল্টিভিটামিন। ফলে চুল পড়া রোধ করে।
  • হেড এন্ড শোল্ডারস অ্যান্টি হেয়ার ফল শ্যাম্পু -- এই শ্যাম্পু টি মূলত খুশকি দূর করতে তৈরি করা হয়েছে। খুশকি দূর করতেই অনেক কার্যকরী। এই শ্যাম্পু চুল পড়া রোধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

লেখক এর শেষ কথাঃ অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ ও এর প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার চুল মানব দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু নানা কারণে অল্প বয়সে চুল পড়ে যায় এবং মাথার চুল পাতলা হতে থাকে। চুল পড়ার সাথে বয়সের কোন সাথ নাই। অনেক অল্প বয়সেও চুল পড়তে পারে আবার মাঝ বয়সে কিংবা বৃদ্ধ বয়সেও চুল পড়তে পারে। দৈনন্দিন জীবনে নানা ধরনের দুশ্চিন্তা, খাদ্যে পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি, হরমোন জনিত সমস্যার কারণ ছাড়াও নানা কারণে যেমন চুলের সঠিক যত্ন না করার কারণে অল্প বয়স থেকে শুরু করে বৃদ্ধদেরও চুল পড়ে যায়। 

চুলের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টির দরকার হয়। আপনি যদি আপনার খাদ্যভ্যাসে চুলের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি সরবরাহ করে এমন খাবার যুক্ত করেন। এবং চুলের যত্ন করেন তাহলে আশা করা যায় চুল পড়া বন্ধ করতে পারবেন। আর্টিকেলটিতে আমি অল্প বয়সে চুল পড়ে যাওয়ার যাবতীয় কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আর্টিকেলটি পরে যদি আপনি উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুবান্ধব অথবা আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে শেয়ার করে দিন যাতে করে তারাও যেন আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হতে পারে। ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url